Wednesday 20 December 2017

শাশ্বতী সান্যাল


কবিতাগুচ্ছ



মেঘদূত

শহরে জলকষ্ট
ফুলগাছ সব মরে গেছে
বাগান-বিলাসী আমি কবিচক্র থেকে রাতে
খালি হাতে বাড়ি ফিরে আসি
সহজে ডিঙিয়ে যাই শিকড়ের আর্তনাদ, ধুলো...

বিচ্ছেদের দিন আসে, ফুল ঝরে যায়
বত্রিশ পেরিয়ে গেলে মেঘ করে বকুল শাখায়
শহর বৃষ্টিহীন
শুধু জানি এবছর
মেঘদূত চালু হল স্কুল সিলেবাসে

সত্য বল সেলুকাস, তোর গ্রামে বৃষ্টি এলে
এখনো আমার পদ্য ভিজে হাওয়া বয়ে নিয়ে আসে?



কাপালিক

তোমার ভিতরে একটা পাথরের কাপালিক আছে
কত কত রাত আমি ঘুমিয়ে থেকেছি তার পায়ে
শুকনো জবার মতো
খিদে,তেষ্টা, ব্যাকরণ - কিছুই বুঝিনি
পাথরের খাঁড়া থেকে তাজা রক্ত গড়িয়ে পড়েছে
ফোঁটা ফোঁটা, হলুদ পরাগে

সর্বাঙ্গসুন্দর এক শিশুমূর্তি চেয়েছিলো
এই হাঁড়িকাঠ
বন্ধ্যা জরায়ু থেকে আমি ছিঁড়ে এনেছি শেকড়
তুমি নাও
এই শুকনো লীলাধর্ম তোমাকে মানাবে

নিশ্বাসের শব্দ ছাড়া গুহার ভিতরে কিছু নেই
চুনাপাথরের মধ্যে শব্দহীন ঝরে পড়ে জল, টকজল
ছেনিহাতুড়ির দাগ, যেটুকু অনিচ্ছাবশে
থেকে গেল, থাক ক্ষতি নেই

'পাথরের নীরবতা ভাঙা যায়না', এমতো প্রবাদ
আমি ইদানিং বিশ্বাস করেছি



প্রতিবেশী

রক্তিম তরল হয়তো কিছুটা নেশার জন্য দায়ী
স্পর্শ করিনি আলো স্পর্শ করিনি নীল বিষ
লাল রঙ আমাদের ভালো লাগে, তাই গ্লাসে গ্লাসে
বন্ধুদের রক্ত নিয়ে  আড্ডায় বসেছি

শহরে ট্রেন আজ অতিরিক্ত দুমিনিট
দাঁড়িয়ে থেকেছে ব্যাগ কাঁধে পুরুষ যাত্রীটি
ভারি চশমাগালে অল্প দাড়ি

কোনোদিন পাশাপাশি হাঁটতে পারিনি, তাই ভেবে
এই অন্ধকার গ্লাসে আমি তার স্বাস্থ্য পান করি








No comments:

Post a Comment