Wednesday 20 December 2017

ম ণি শং কর বি শ্বা স





কবিতাগুচ্ছ









নতুন কবিতা


আমাকেও বশ করে গ্রহতাপ, কুরুক্ষেত্র টিলা, রক্তকেশর—
অশ্বারোহণের পূর্বে মানসিক প্রস্তুতির প্রয়োজন।
ঠাণ্ডা মাথায় চাঁদ দেখি।
গ্রাম্যমৌজার মতন বিরোধজটিল হয়েছে বাক্য ও বুদ্ধি।
হরিণা, মেঘপ্রিয়া, অবন্তিকা—
নানাবিধ যৌনবিস্কুটের কথা মনে পড়ে।
আশ্রমিক জবা ও গৃহীময়ূর আমাকে থেকে যেতে বলে—
আমিও কবিতা করি এই অছিলায়
কুরুক্ষেত্র টিলার ‘পরে সন্ধ্যাতারা ফোটে
প্ররোচনাহীন বুদ্ধ, স্তম্ভিত আকাশের গা’য়।


অর্থহীনতা থেকে নিরর্থের দিকে যে যাত্রা
তাকে আমি শাপলাফুল হয়ে ফুটে থাকতে দেখি।
কৈবর্তরাজকুমার ছিপ ফেলে বসে থাকে।
পোড়াজলে খলবল করে ওঠে মাগুরদেবতা।
বুধাদিত্যবর্ণের আলোয় উদ্ভাসিত মেঘালয়।
জ্বরপৃথিবীর এইটুকুই সান্ত্বনা।


ক্রমঘনায়মান সন্ধ্যার ’পরে
ইহজগৎ একটি জোনাকিগাছের অবতারণা করে
স্বেচ্ছামৃত্যু ও রাতের বল্মীক আমার কেশ স্পর্শ করে বলে
সহকর্মীর মাছ-ধরার গল্পের মত শৈলীহীন হও।
তবু যারা আমাকে নিখুঁত হবার আদেশ করেছেন
তাদেরকে বলি, আমারও একটি অণ্ডকোষ
তুলনামূলক ভাবে ক্ষুদ্রকায়
আমি-ই যে আমি, সে প্রমাণ কোথায় এই রচনায়?



চাঁদের সুড়ঙ্গে ওত পেতে বসে থাকে
অন্ধকার ময়ূর, আশ্চর্য প্রদীপ
উদীচী প্রাঙ্গণে শিবিরবিহীনের তাঁবুতে আমিও-কি
ওরকম একাই বসে আছি?
ক্ষীণকটি শ্রীমতী চন্দ্রকিরণও ক্রমশ
হয়ে উঠছেন মৃদু শেফালীতলা।
উন্মাদকল্পনা থেকে তবে উন্মাদের কল্পনা কতদূরে?

তোমার স্তনের দিকে তাকিয়ে
হামাগুড়ি দিতে ইচ্ছে করে—
মনে হয় এই সেই পূর্ণব্রহ্ম।
ফলে খাটো করে রাখি আত্মজিজ্ঞাসার হাত,
আমার মূর্ধন্য ণ। রেতঃছায়া দীর্ঘ হতে হতে
বর্তুলাকার রাত্রি নামে—
গ্রামদেশে যাত্রাপালার তাঁবু।
আর জ্যোৎস্নায় লেগে থাকা চাঁদ
সমগ্রের উপর ভাসে, যেন মঞ্চসফল ভক্তপ্রহ্লাদ।

রাণা প্রতাপের চৈতকের মত তেজী বাতাস বইছে
মৃত্যুর কিছুদিন আগে নিঃসঙ্গ বৃদ্ধের
যৌনেচ্ছার মত হলুদ সর্ষেক্ষেত—
আকাশের জীবন্ত দেবতার চুল থেকে
নেমে আসা হাঁসগুলি মিশে যায় বালুচরি মেঘদলে।
যেন জলশহরের বাগদত্তা আর বিচ্ছুরণসুন্দরীর
চোখাচোখি হয়; এই-ই ভোর,
“দোর খোল আত্মজিজ্ঞাসা, টোটেমঠাকুর।”






প্রতিদিন ঘুণাক্ষরে উঠে দেখি
আরো ছোট হয়ে গেছে সীমানা
তোমাকে ইচ্ছে করে না আর।
বরং প্রতিবেশিনীর রাধাচূড়ায় কাঁপে চুম্বকশিখা।
কেন বস্তুহরিণ প্রতিস্থাপনযোগ্য নয়?
সহসা ডাক আসে, ঋষিবালক... বাল্যবিবাহ...
শুধু বালু দ্বারা নির্মিত গৃহ অপেক্ষা
বায়ু-নির্মিত গৃহ শ্রেয়, অধিক কাঙ্ক্ষিত।



ক্রমশ ভুল কবিতার দিকে চলে যাব।
গৃহপথ একই থাকে; জতুগৃহ—
কদাকার অগ্নিস্বর্প জ্বলে।
মুখাগ্নি অন্তরীক্ষের;
জলের নিভৃতে কাঁদে জল।


 

No comments:

Post a Comment