গল্প
চ ন্দ ন ঘো ষ
শুঁয়োপোকা
এতক্ষণ সিধু ভাবছিল কেউ
তাকে নিশ্চয়ই দেখতে পাচ্ছে না। এই যে সে বিশুদের রোয়াকে গাঁজা টেনে পড়ে আছে, এতে
করে তার পাদুটো আর হাত দুটো গুটিয়ে ইট্টু হয়ে পেটের ভিতর সেঁধিয়ে গেছে। আর ফাটা
কলারের ওপর দিয়ে মাথা ফাথাও আর দেখা যাচ্ছে না। আর ওই যে রোয়াকের বাঁ দিক দিয়ে ইয়া
বড়ো বড়ো পিঁপড়েগুলো হেঁটে যাচ্ছে, ওদের দেখে তার ভয়ও করছে খুব। যদি একটা বড়োসড়ো
চিনির দানা ভেবে ব্যাটারা তুলে নিয়ে যায় ওকে।
এখন এই শরীর নিয়ে বাড়ি ফিরে যাবে কী করে সিধু। হাত পা-ই নেই। তো কি গড়াতে গড়াতে
যাবে সে? চারদিকে রঙবেরঙের এই যে আলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। বউকে তো তবে এইরকম
রামধনুর মতো লাগবে। যেন কোনো মানুষ না, একদলা আলো। আর বউই কি চিনতে পারবে
ওকে? কী জানি কী বলবে! রোজ রোজ কী সব টেনে আসো। এখন তোমার হাত-পা-মাথাই তো
খুঁজে পাচ্ছি না। তা হলে সে কী ভাগিয়ে দেবে সিধুকে? নাকি যত্ন করে আবার ওর হাত পা
মাথা টেনে টেনে বের করে সিধুর এই অসম্পূর্ণ কবন্ধ শরীরটাকে সে আবার
সম্পূর্ণতা দেবে। এই বিকলাঙ্গ শরীর আর সহ্য করতে পারছে না সিধু। এই শুঁয়োপোকার
জীবন ফুঁড়ে এবার তাকে প্রজাপতি হতে হবে। হতেই হবে।
বাড়ি
ফিরতে হবে, বাড়ি ফিরতে হবে এইসব কথা যখন দুগ্গা পুজোর ঢাকের বোলের মতো বাজছিল
সিধুর কানে ঠিক তক্ষুণি কালুদের কার্ণিশ থেকে একটা বড়োসড়ো দাঁড়কাক ছোঁ মেরে
এসে বেমক্কা তুলে নিয়ে গেল সিধুকে। শুধু যাবার আগে ফিচলেমি করে বলে উঠল,
"ক্ব"।
No comments:
Post a Comment