Thursday 21 December 2017

হিন্দোল ভট্টাচার্য

ধারাবাহিক গদ্য

মোংপো লামার ডায়েরি

সে একটি উজ্জ্বল রঙ দেখে তার পিছন পিছন ছুটে গেল। রঙটি আসলে উজ্জ্বল ছিল না। ছিল এক স্বাভাবিক আলো। এত দূর থেকে সে, তাকে বুঝতে পারেনি। বহুদিন ধরে অন্ধকারের ভিতর দিয়ে ছুটে আসতে আসতে, সে হারিয়ে ফেলেছিল সমস্ত দিক, হারিয়ে ফেলেছিল তার উদ্দেশ্য। একটি রাস্তা ধরে ছুটে যেতে যেতে অনেক সময় এমনটাই হয়। কখন যে রাস্তার ধর্ম তার হয়ে ওঠে, বোঝা যায় না। সেই পথিক তখন ভুলে যায়, যে রাস্তা কেবল তার মাধ্যমমাত্র, তার ধর্ম হতে পারে না। যখন তার মনের মধ্যে এই উপলব্ধি আসে, তখন আর ফেরার কোনও রাস্তা থাকে না, কারণ, চলতে চলতে, পথিক, সেই পথটিকেই গড়ে তোলে মাত্র, আর তার গড়ে তোলা পথেই সে নিজে হারিয়ে যায়। যদি না, সে নিজে অস্বীকার করে সেই পথটিকে।

কিন্তু পথকে অস্বীকার করলেই কী আর অস্বীকার করা যায়? সে তো থাকে, হয়ত, সে অন্য কোনও রাস্তার জন্ম দেয়। অন্য কোনও রাস্তাও তো আসলে রাস্তাই। তবে কী পথিক একের পর এক রাস্তার জন্ম দিতে দিতে যাবে? তার কি যাওয়াই কাজ? এ কথার হ্যাঁ বা না বলার কেউ নেই। বিশেষ করে এই সময়ে, যখন, রাস্তাগুলো নিজেরাই ভীষণ দিশাহীন, ইংরিজিতে যার অনুবাদ হতে পারে কনফিউজড। সে প্রথমে ভেবেছিল, রাস্তাগুলো ছন্নছাড়া, কিন্তু আসলে তা নয়। দিশাহীন সে-ই, যে, নিজে জানে না, সে দিশাহীন। আর সব থেকে বড় কথা, কেই বা বলে দেবে যে আসল দিশা কোনটি? কার? কবেকার? মহাজন যে পথে করেন গমন, সেই পথ মহৎ হতেই পারে, কিন্তু সে-ই পথ যে আমার, তা তো না-ই হতে পারে। প্রতিটি মানুষ তার নিজস্ব নিয়তির রাস্তাঘাট নিয়ে এই পৃথিবীতে এসেছে। তাকে সেই সব রাস্তা দিয়েই যেতে হবে, যেতে হয়। এ ছাড়া তার আর কোনও উপায় নেই। দরকার পড়লে, সেই সব রাস্তা থেকে সে বড়জোর তৈরি করতে পারে এক-আধটা গলি, কিংবা রাস্তার ধারে একটা চায়ের দোকান, কুঁড়েঘর, বা উল্টোদিকে যাওয়ার কোনও রাস্তা।



এই উল্টোদিকে যাওয়ার রাস্তাগুলো আসলে কোথায় যায়? ভেবে দেখলে, যেখান দিয়ে এসেছে, সেখানেই তো ফিরতে থাকে। তাহলে কী উল্টোদিকে হাঁটতে হাঁটতে, পথিক এক সময়ে পৌঁছে যেতে পারে সেই বিন্দুতে, যেখান থেকে তার পথ হাঁটা শুরু হয়েছিল কোনও একদিন?

এই যেখানে চাঁদনি চক মেট্রো স্টেশন, তার সামনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সে ভাবছিল এসব। আর পাশ দিয়ে বয়ে যাচ্ছিল স্রোতের মত কলকাতা শহর। কতবার সে চেষ্টা করেছে এই কলকাতা শহরটাকে তার ভাবনা থেকে সরিয়ে দিতে, কিন্তু আদ্যন্ত নাগরিক এক মানুষের এই এক সমস্যা, অবচেতন থেকেও নাগরিকতা দূরে সরে যায় না। যেমন ধরা যাক, তার কথা। অনেক সময় পাতাল রেলের সুড়ঙ্গের মধ্যে ঢুকে তার মনে হয় একটা আদিম অন্ধকার ওই ট্রেনের সুড়ঙ্গের মুখে শুরু হয়ে গেছে। দুই দিকেই এই আদিম অন্ধকার, তার মধ্যে দিয়ে নির্বাক নিয়তির মত ছুটে আসে ট্রেন। মানুষ কী এই জন্যই পাতাল রেলের সামনে মৃত্যুর প্রতি স্পৃহা অনুভব করে? যেন এই শহরের আদিম মাতার জরায়ুর অন্ধকার একদিকে, আর অন্যদিকে সেই ঈশ্বরী। মাঝখানে ট্রেনের থেমে থাকার মত জীবন আমাদের। আমাদের জীবন, আমাদের ঠেলাঠেলি, আমাদের প্রেম, আমাদের লোভ,ঘৃণা, হিংসা, খ্যাতি- সমস্ত কিছুই। ট্রেন চলে গেলে, সব নীরব। আশ্চর্যজনক ভাবে নীরব। গতির মধ্যে এই স্থিতি যদি আমাদের চিরকালীন মায়া হয়, আর স্থিতি যদি সভ্যতা হয়, তবে এ তো এক মহাজাগতিক মায়া, যে আমরা একটা শহরে আছি, আমরা একটা সভ্যতায় আছি, আমরা অনুভব করতে পারছি কোনটি গতি, আর কোনটি স্থিতি। অন্ততপক্ষে আমরা অনুভব করার কথা ভাবছি। যেমন, এই আপাত নীরব,  আপাত আলোময় পাতাল রেলের স্টেশনে দাঁড়িয়ে ভাবে যায় না, বাইরে এই সভ্যতার বিভিন্ন রাস্তা কীভাবে একে অপরের সাথে গোঁতাগুঁতি করতে করতে ভিড় হয়ে আছে। সবকিছুই তার মানে গতির মধ্যে স্থিতি এবং স্থিতির মধ্যে গতি।

সে আসলে কোনও উজ্জ্বল্ আলোই দেখেনি। হেঁটে যাচ্ছিল এক গাঢ় অন্ধকারের মধ্যে দিয়ে। বহুকাল ধরে। এই অন্ধকার কী নরক? তা-ই বা কে বলেছে? কাকেই বা বলেছে? নরকে আলো নেই, স্বর্গে আলো আছে, এমন তো না-ই হতে পারে। যদি ভোরবেলা উঠে বলো, আহা অপরূপ! নরকের মত সুন্দর! আর অন্ধকার রাত্রিকে দেখে কেউ যদি বলে – আহা স্বর্গের মত সুন্দর! তাহলে কী খুব অন্যায় হবে? ভেবে দেখলে, দিনের জগতটাই মায়ার, কারণ সূর্য নিজে তো অন্ধকারেই থাকে। সেই ক্ষণিকের আলো পৃথিবীর  অর্ধেকটা আলোকিত করে বলে আমাদের মনে হয় আলোই স্বর্গ। কিন্তু চেয়ে দেখো রাত্রির জগতের দিকে। এক অনন্তকালীন জগত। তুমি দেখো, আর না দেখো, দিন হোক বা রাত, এই মহাশূন্যতাই আসলে অপরূপ সত্য, এই মহাশূন্যতার মধ্যে দিয়েই তোমার জন্ম, এই মহাশূন্যতার কাছেই তোমার হারিয়ে যাওয়া, মিশে যাওয়া। যাকে আলো বলো, তার ভিতরেই তো আছে নরকের অন্ধকার, আর যাকে অন্ধকার বলো, তার ভিতরেই আছে পবিত্র আলো। তুমি কী দেখেছ সেই আলো?

আমি তাই অন্ধকারবাদী। যদি কোনও তথাকথিত বাদী হতেই হয়। কারণ অন্ধকারে আমি ভিড়ের মধ্যে নির্জন হয়ে ওঠার স্বাদ পাই। আলোয় নির্জনতার মধ্যে ভিড়ের। তখন আমি একলা হতে পারি না যে! আর একলা হতে পারাই প্রেমের কাছে পৌঁছনো, ভালবাসার কাছে সমর্পণ। পূজার মধ্যে দিয়ে তুমি নিজেই যে আসলে ঈশ্বর, নিজেই যে আসলে পূজ্য, তাকে অনুভব করার জন্য, বা, প্রেমের মধ্যে দিয়ে নিজেকে খুঁজে পাওয়ার জন্য, বা, ভিড়ের মধ্যে নিজেকে ভিড় করে তোলার জন্য, বা অন্ধকারের মধ্যে নিজেকে একটুকরো আলো করে তোলার জন্য- একলা হও, একলা হও, একলা হও। মন আসলে কিছু না, নিজেকে একলা করার পাত্র মাত্র। যখন তুমি খুব ভিড় হয়ে থাকবে, মন তখন বারবার তোমাকে নিয়ে যাবে সেই অন্ধকারের দিকে। বলবে- আলো নেই, আলো নেই, আলো কোথাও নেই। তুমি তখন একলা হেঁটে যাবে। বসে থাকবে কোনও পার্কে হয়ত। বা আগে যেমন করতে, একটা ট্রামে চড়ে চলে যেতে প্রথম গুমটি থেকে শেষ গুমটির দিকে। সারা শহর বাড়ি ফিরত, সবার রাস্তা আছে। আর তুমি চাইতে রাস্তাটা গুলিয়ে ফেলতে। ভুলে যেতে সব রাস্তা। কিন্তু ট্রাম তোমাকে ভুলতে দিত না। ফিরিয়ে আনত।
যে কথা বলছিলাম। তাহলে কী রাস্তাটাই তোমার ধর্ম? না কী তুমি রাস্তাকে প্রতিনিয়ত তৈরি করছ? আসলে কী করছ তুমি? ভালবাসছ? আদর করছ? কবিতা লিখছ? কবিতা পড়ছ? বেঁচে থাকছ? নিজেকে প্রশ্ন কর। নিজেকে রোজ প্রশ্ন কর। দরকার পড়লে, সব আবার এলোমেলো করে দাও। আবার নিজেকে প্রশ্ন কর। আবার সাজাও। অথবা নিশ্চেষ্ট হয়ে থাক। হয়ত তুমি নিশ্চেষ্ট হয়ে যখন যাবে, তখন তোমার কাছে প্রেম আসবে। কবিতাও আসতে পারে। এমনকী সেই রহস্যময়ী রাস্তাটিও আসতে পারে, যার জন্য, তুমি রাস্তার ধারে সরাইখানা তৈরির কথা ভাব মাঝেমাঝে।
গভীর রাত্রির দিকে তাকিয়ে নিজেকে ভাগ্যবান মনে হয়। এই যে ক্রমাগত জন্ম নেওয়া,মরে যাওয়া এক একেকটি নক্ষত্র, এই যে ক্রমাগত প্রসারণশীল, সৃষ্টি আর ধ্বংসের লীলায় উদাসীন ভাবে ব্যস্ত মহাকাশ, আমি তার অংশ। এই মহাজগতে কোনও কেন্দ্র নেই, আবার প্রত্যেকটি বিন্দুই কেন্দ্র। তার মানে আমিও তার কেন্দ্র, কারণ আমিও তার বিন্দু। যে পূজ্য, যে উপাসনারত, যে নাস্তিক, যে আস্তিক, যে খুনী, যে হত্যাকারী, - সকলে বিন্দু এবং এই বিশাল মহাজগতের কাছে কেন্দ্র। তার কাছে কেউ ছোট-বড় নেই। আমাদের নিজস্ব সময় দিয়ে যে সময় জন্ম নিয়েছে শূন্যতা সৃষ্টির সময়ে, তার সময়ের কোনও সম্পর্ক নেই। কারণ আমাদের সময় হল, আমাদের অনুভূত সময় । আর মহাজগতের সময় হল আমাদের অনুভবের বাইরে যে সময়, তা। তুমি কত অসহায় ভেবে দেখেছ? তোমার অনুভবের শক্তি কত কম। তবু যেটুকু আছে, তা দিয়ে তুমি ধ্বংসের কথা শুধু ভাব। ধ্বংসের কথাও তো তুমি ভাববে, কিন্তু শুধুই কী ধ্বংসের কথা তুমি ভাববে? যে ধ্বংস কিছু সৃষ্টি করে না, তার কথা ভাবা মানে মহাজগতের ধর্মকে তুমি ধারণ করলে না। আর তার মানেই তোমার শেষের দিন শুরু হয়ে গেল তোমার অজান্তে। কারণ মহাজগতের নিজের ইচ্ছে নেই হয়ত, কিন্তু তার কিছু নিয়ম আছে। যে নিয়মে তোমার রক্ত চলে, নাড়ী চলে,হৃদয় চলে, তুমি কারো প্রেমে পড়, কাউকে গভীর ভাবে ভালোবেসে ফেল, যে নিয়মে কোনও মেয়েকে দূর থেকে দেখলেও তোমার মনে হয়, সে-ই তোমার আরাধ্যা, তোমার অপেক্ষা, ঠিক তেমনই, মহাজগতের এই নিয়মে, তুমি ধ্বংস করতে পারো তখনই, আর ততদূরই, যতদূর একটি নতুন কিছু সৃষ্টির মহাজাগতিক ইচ্ছে তোমার মধ্যে দিয়ে ব্যবহৃত হয়। আমি, তুমি, - আমরা কেউই আসলে নিজেরা কিছু করছি না। আমরা বাহক মাত্র। আমরা উপলক্ষ মাত্র। কেউ কলম হয়ে ধরছে বোধের বার্তা, কেউ সুরের কাছে নিজেকে করে তুলেছে যন্ত্রী, কেউ বা দৃশ্যের কাছে নিজেই ক্যানভাস, বা তুলি, বা পেনসিল। নিজেকে সৃষ্টিশীল ভাবলে মুশকিল। তখন এক অবাঞ্ছিত অহংকারের জন্ম হয়, আর মহাকাল তোমার দিকে তাকিয়ে হাসেন। আসলে দীর্ঘদিন সামাজিক মানুষ হিসেবে বাঁচতে বাঁচতে মানুষ ভুলে গেছে হয়ত, সে আসলে সামাজিক জীব আদৌ নয়, সে আসলে বাকি সব জীবের মতই মহাজাগতিক জীব । তাই সৃষ্টিশীল মানুষেরা যখন বিভিন্ন সঙঘ গড়ে তুলে এই করছে, সেই করছে, তখন আসলে সে সমাজ গড়ছে। আর কে না জানে, এ সব হল সময় নষ্টের কারখানা। কীভাবে তুমি সময় কাটাবে, তা যেন সমাজ বলে দিয়েছে তোমাকে। তুমি মেতে থাক। তুমি একের পর ছোট ছোট সমাজ গড়তে থাক, তার রাজা হয়ে ওঠ, সেখানে শাসন কর, কারণ তোমাকে  সব দিক থেকে শাসন করে যাচ্ছে বড় বড় ক্ষমতা। আর তুমি কোনো ক্ষমতার নও। এও যেন মানুষের জিনে আছে। তোমাকে রাজা হতে হবে, নেতা হতে হবে। তোমাকে সমাজ গঠন করতে হবে। কেন করতে হবে? তুমি কি সৃজনের মধ্যে এসেছ সমাজ গঠনের জন্য না কি কান পেতে থাকার জন্য? কখন সেই বার্তা আসে , আর তুমি তাকে ধারণ করতে পার? তুমি তাকে অনুবাদ করতে পারবে তো তখনই, যদি নিজেকে যথেষ্ট নির্জন রিসিভার করে তুলতে পারো, ধারক এক পাত্র করে তুলতে পারো ক্যাকোফনির মধ্যেও তুমি যে তাকে শুনতে পারবে না, এমনটা নয়। কিন্তু নিজেকে ক্যাকোফনির মধ্যেও, ভিড়ের মধ্যেও নির্জন রাখতে হবে। নিজেকে দূরে রাখতে হবে, সকলের কাছে থেকেও। যেমন ঈশ্বর থাকেন, সকলের কাছে, অথচ দূরে। কারণ তিনি, যদি, তিনি থাকেন, তাহলে নিয়ত সৃষ্টিশীল।

তুমি ভাবছ, আমি ঈশ্বরের থেকে বাক্য ও মনের অতীত যে সৃষ্টি, তাকে আলাদা করলাম? হ্যাঁ করলাম। ধরা যাক ঈশ্বর আছেন। তিনি লীলাখেলায় ব্যস্ত। তিনি অবিরত সৃষ্টি আর ধ্বংসের খেলায় ব্যস্ত। কিন্তু তিনি ছন্নছাড়া ভাবে কিছুই করছেন না। এই যে নিত্য ছন্দ, এই নিত্য ছন্দেই তিনি করছেন। এই প্রসারণশীলতাই বল, আর সংকোচনশীলতাই বল- কোনও কিছুই কিন্তু এলোমেলো নয়। বা এলোমেলো হলেও তার মধ্যে একটা শৃঙ্খলা আছে। এই মহাজগতে বিশৃঙ্খলাও শৃঙ্খলার মধ্যে দিয়ে হয়। আপন খেয়ালে মূর্তি গড়ার মধ্যে, বা ধর কোনো শিশু বালির উপর খেলা করতে করতে একটা বাড়ি বানাচ্ছে, তার মধ্যেও একটা ছন্দ আছে, শৃঙ্খলা আছে। সে হয়ত ভেঙেও দিচ্ছে সব, এই ভেঙে দেওয়াটাও সেই সৃজনের একটা অংশ। তো ঈশ্বর এই সৃজনের বোধ কোথা থেকে পাচ্ছেন? তাঁর কাছেও কি মাঝেমাঝে চলে আসছে না বার্তা? তিনিও কি ধারক নন? বা তিনিও কি উপলক্ষ নন? এ অনেকটা সেই প্রশ্নের মত, যে প্রশ্ন আমাদের নিয়ে যায় এক অমীমাংসিত ভাবনার দিকে। আর সেই ভাবনাটি হল, এই মহাজগত তো জন্ম নিয়েছে। শূন্যতাও তো জন্ম নিয়েছে। মরে যাবে বলে। শূন্যতা যখন ছিল না, তখন , মানে, শূন্যতার পূর্ববর্তী শূন্যতাও যখন ছিল না, তখন কী ছিল? এই শূন্যতাকে ধারণ করে রেখেছে কে? কী? আর কেনই বা? তুমি কি এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার পক্ষে উপযুক্ত ধারক? না কি কোনো প্রশ্নেরই আসলে কোনও উত্তর নেই?

মাথার উপরে তাকাও এক অমীমাংসিত প্রশ্ন। রাস্তার দিকে তাকাও এক অসম্পূর্ণ অভিযাত্রা। বাক্যের দিকে তাকাও, সব কিছুই অসমাপিকা ক্রিয়া। ফুল থেকে ধুলো, কুয়াশা থেকে বৃষ্টি, পাহাড় থেকে সমুদ্র, অট্টালিকা থেকে কুঁড়েঘর, জন্ম নেওয়া শিশু থেকে জরাজীর্ণ বৃদ্ধ, বসন্ত থেকে শীত—সর্বত্র একটাই কথা প্রতিধ্বনিত হচ্ছে—জানি না, জানি না, জানি না ।

তুমি শুনতে পাচ্ছ?


(ক্রমশ)


                                                                                        


1 comment:

  1. ভাষা নেই লেখার মতো। মনের ভেতরকার জটিল কতগুলো গিঁট খুলে গেল শুধু। ��♥

    ReplyDelete